বুক রিভিউ : বইটি যতই পড়ছি ততোই মুগ্ধ হচ্ছি।লেখক বইটিতে তার সুগভীর চিন্তাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে এক অসাধারণ পান্ডিত্যর পরিচয় দিয়েছেন। বইটিতে দু জন চরিত্রের মাধ্যমে মূল বিষয় গুলো তুলে ধরা হয়েছে।যদিও একাধিক চরিত্র রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাই মাসুম,তার ভার্সিটির ছোট ভাই আবিরকে যে উপদেশ গুলো দিচ্ছে তা উপদেশ নয় বরং জীবনকে পরিচালনার সব ফর্মুলা রয়েছে।যখন বইটি পড়েছি,তখন মনে হলো লেখক নিজেই ঐ মাসুম ভাই আর আমি সে আবির। তার প্রতিটি কথা জীবন পরিবর্তনের এক একটা ধাপ। বইটির এমন কোন অংশ নেই যেখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার কিছু নেই।তবুও ভালো লাগা কয়েকটি বিষয় তুলে ধরছি,
লেখক বুঝাতে চেয়েছেন যে,
মেধাবী হওয়ার গোপন রহস্য অধ্যবসায়।পৃথিবীতে মাল্টি ট্যালেন্টেড হওয়ার একটাই ফরর্মূলা তা হলো কঠোর অধ্যবসায়। আর আমাদের যদি লক্ষ্য পৌছতে হয় তাহলে ১০০ মিটার দৌড়ে পৌছতে পারব না।আমাদের ধীরে ধীরে আগাতে হবে অর্থাৎ লক্ষ্য পৌছানোর জন্য যা যা প্রয়োজন সে গুলোকে কয়েকটি ধাপে ভাগ করে এগোতে হবে তাহলে অবশ্যই লক্ষ্য পৌছানো সম্ভব।তবে এর প্রথম ধাপটি হলো আত্মবিশ্বাস।কারণ আত্মবিশ্বাস থাকলে মানুষ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে।আর এ আত্ম বিশ্বাসের ফর্মুলা বইটিতে লেখক সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন।
অনেক সময় আমরা কোন কাজ করার আগে পাছে কি হবে এই ভেবে কাজটি শুরু করি না কিন্তু এমনটি না করে আমরা কাজটি শুরু করে দিয়ে সফল হওয়ার হাজার পথ পাব তা সুন্দর ভাবে লেখক উপস্থাপন করেছেন।বার বার হেরে যাওয়া সত্ত্বেও হাল না ছেড়ে সফল হওয়ার বিকল্প পথ খুজে সফলতার দরজায় আঘাত হানতে হবে,একবার নয় শত বার।
লেখকের বক্তব্য থেকেও আর কিছু বিষয় ফুটে উঠেছে , আমরা অনেক সময় পরিবেশকে দোষ দিয়ে থাকি। আসলে পরিবেশ কখনো আমাদের কাজের ব্যাঘাত ঘটায় না, তা নিছক একটা অজুহাত মাত্র। আপনার যদি ইচ্ছা শক্তি থাকে তাহলে আপনি যে কোন পরিবেশ থেকে সফল হতে পারবেন। আর জীবনে এমন কাউকে অনুসরন করা উচিত যার মতো হতে চাই।তাহলে তাকে অনুসরন করতে করতে কি ভাবে তার চেয়ে উপরে পৌছানো যায় তা লেখক তুলে ধরেছেন। লেখকের উপস্থাপনায় সবচেয়ে ভালো লাগা একটি লাইন,আমাদের লাইফ কন্ট্রোল করে তিনটি জিনিস।হয় অতীতের কষ্ট,না হয় বর্তমানের আনন্দ অথবা ভবিতষ্যতের এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন।এখন আপনি কাকে আপনার জীবন কন্ট্রোল করতে দিবেন?
তা আপনিই বিচার করুন। মাত্র ১৫০ টাকা দিয়ে এরকম বই পড়া ভাগ্যর ব্যাপার বটে। পরিশেষে বলবো Ordinary people think merely of spending time,great people think of using it.লেখকের নামের সাথে বইয়ের মিল আছে।বইটি যেমন পড়ার পর যে কারও মনে ঝংকার তুলতে পারে ঠিক তেমনি লেখকের নাম ঝংকার। বইটি কেনার আগে আমার বন্ধুকে বলেছিলাম একটা বই দেখবো মেলাতে তুই কোন কথা বলবি না।পছন্দ হলে কিনব না হলে দেখে চলে আসবো। কিন্তু বইটির পাতা উল্টাতে উল্টাতে Zuckerberge এর একটা লেখা দেখে আমি আর কিছু না ভেবে কিনে ফেললাম।উক্তিটি:The biggest risk is not taking any risk.বাসায় এসে যখন রাখলাম তখন একটা বই পড়তেছি।আমার বড় ভাই অনেকটা অলস।
সে দেখলাম বইটা পড়ছে আর বলছে চমৎকার জীবন পাল্টে দেওয়ার মতো বই।তখন ভাবলাম বইটা একটু দেখি যেখানে অলস মানুষ বই পড়ে জীবন পাল্টে যাওয়ার কথা ভাবছে তাহলে নিশ্চয়ই ভালো হবে।আর পড়া শুরু করে আর আমি থামিনী একেবারে শেষ করে ফেললাম।আর ভাবলাম মার্ক জাকারবার্গ আর ভাইয়ার কারনে এমন রত্ন পেলাম।বই মেলাতে গেলে অবশ্যই বইটি কিনবেন।ক্যারিয়ার নিয়ে যারা হতাশ,যারা তাদের সন্তানদের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছেন তাদের বলবো এই বইটি কিনে দিন।এরপর দুই একদিন পর দেখেন কি হয়।
বইটির নাম এন্টিবায়োটিক হলো মনে হয় ভালো হত।কারণ বইটি পড়ার পর থেকে আমি নিজের মধ্য একটা পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম।বইটির রিভিউ লেখার মতো যোগ্যতা নাই তবুও ভালো লাগায় সামান্য লেখার চেষ্টা।গল্পের মাধ্যমে কিভাবে জীবন গড়ার ফর্মূলা জানতে হয় তা এই বইতে আছে।আশা করি সবাই বইটি পড়ে বুঝতে পারবেন কেন একটা বাচ্চা ছেলে বইটি নিয়ে বকবক করলো।
বইটির সাথে 'তুমিও জিতবে' বইটির সাথে তুলনা করলে 'তুমিও জিতবে ১০/৭ আর বইটি ১০/৯।প্রিয় লেখক আপনাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না।বইটি পড়ে আপনার কাছে ঋণী হয়ে গেলাম।
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]