সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে, ইঞ্জিনের টানে গাড়ি ছোটে
গায়ের রং কালো হওয়ায় নিগ্রো, মা-কালী, পাতিলা-বেগম, কালো মানিক, কিংবা আফ্রিকান বলে ইঙ্গিত করতে অনেকেই দ্বিধা করে না। উচ্চতায় খাটো হওয়ায় দেড়-ইঞ্চি, সিমের বিচি বলে সম্বোধন করাকে আমরা খারাপ চোখে দেখি না। তোতলানো ছেলেটার সামনে ইচ্ছে করে তোতলায়ে ব্যঙ্গ করাকেও ইনসাল্টিং হিসেবে ধরা হয় না। আর চিকনা হলেই গাঁজাখোর ধরে নেয়া, স্বাস্থ্য-ভালো হলেই মোটি বলা আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে। তাছাড়া চুল খাড়া হলে সজারু, চশমার পাওয়ার বেশি হলে কানা বাবু, নাক ছোট হলে চাইনিজ- এগুলা যেন খুবই স্বাভাবিক কথাবার্তা।
অথচ যে কম উচ্চতা নিয়ে বেড়ে উঠে তার মানসিক অবস্থা, মনের ভিতরের আক্ষেপ। প্রশ্ন করতে গিয়ে তোতলানো ঠেকাতে না পারার ফ্রাস্ট্রেশন, অপরিচিত মানুষের সামনে ইনসাল্টেড হওয়ার কষ্ট; মজা নেওয়া পাবলিকরা কোনদিনও চিন্তা করে দেখে না। একটু ডিফারেন্ট হিসেবে বেড়ে উঠার চ্যালেঞ্জ, উপেক্ষিত হওয়ার যন্ত্রণা কেউ বুঝতে চায় না।
গায়ের রং কালো নিয়ে জন্মানো মেয়েটার জীবনই শুরু হয় রং ফর্সাকারী ক্রিম মুখে দেয়ার উপদেশ শুনে। ভালো বিয়ে হবে না বলে, মায়ের উৎকণ্ঠা ভরা চোখ দেখে। আর বড় হওয়ার সাথে সাথেই বাড়তে থাকে- রাস্তাঘাটে পরিচিত, অপরিচিত মানুষের উপহাস। বন্ধুদের উপেক্ষা। শিক্ষক-সিনিয়রদের অবজ্ঞা। এই অবজ্ঞা বহনকারী কিশোর-কিশোরীদের মনের অবস্থা কি উপহাস করার আগে এক সেকেন্ডের জন্যও চিন্তা করে দেখেছো? তার ঘুটিয়ে নেয়ার, লুকিয়ে থাকার কারণ জানতে চেয়েছো?
না চাওনি। তবে নেক্সট টাইম উপহাস করার আগে, তার জীবনটাকে তার অবস্থান থেকে দেখার চেষ্টা করো। তখনি বুঝতে পারবে- "কালো কে কালো বলা, খাটো কে খাটো বলা- অশোভন না। অপরাধ। সিরিয়াস লেভেলের অপরাধ।"
হুট হাট করে মাঝে মধ্যে লেখা আসবে
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]