Care, Curisity, Courage and Control for student life
শুধু ট্যালেন্ট দিয়ে সব হয়ে গেলে, যে ফার্স্ট হয় তাকে ক্লাসে যাওয়া লাগতো না। এক সপ্তাহ হাসপাতালে ঘুরাঘুরি করে ডাক্তার হওয়া গেলে, পাঁচ-ছয় বছর ধরে, মোটা মোটা বই কেউ পড়তো না।
ভার্সিটি লাইফে চারটা পার্ট থাকে। প্রথম পার্টে সবাই ফ্যাকাল্টি হবার স্বপ্ন দেখে। কয়দিন পরে সেমিস্টার ফাইনালে ডাব্বু মেরে, ফার্স্ট হবার স্বপ্ন চাঙ্গে উঠলে, নিত্য নতুন সখ এসে চুলকানি মারে। ফটোগ্রাফি, ফ্রিলাঞ্চিং, ইউটিউবে ভিডিও বানানো, সাইক্লিং সহ হাজার খানেক সখের তেল কমে গেলে, পোলাপান সখী খোঁজে। সখী খুঁজতে খুঁজতে, আশেপাশের সবাইরে অসুখী বানিয়ে, হাজার খানেক ব্লক খেয়ে GRE, TOEFL এর বই কিনে, হায়ার স্টাডির ধ্যানে বসে। আরো কিছুদিন পরে, কোন রকমে টেনেটুনে পাশ করে ফেলতে পারলে, বিদেশ সফরের ধ্যান বাদ দিয়ে মাল্টিন্যাশনালের চাকরি খুঁজে।
জিপিএ ভালো হইলে ভালো। তবে জীবনে সফল হওয়ার জন্য জিপিএ একমাত্র অবলম্বন না। ভার্সিটি লাইফের সব সাবজেক্ট ভালো করে পড়লে, খুঁটিনাটি বুঝলে ভালো। তবে না বুঝলেও তোমার জন্য সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে না। ধরলাম তুমি ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট এবং তোমার জিপিএ জঘন্য। ২.৭৫ এর কাছাকাছি। গত চার বছরের তিন-চারটা সাবজেক্টের নাম ছাড়া ভিতরের কিছুই বলতে পারবা না।
পরীক্ষায় ভালো নম্বর না পাইলে, সেমিস্টারের শুরু থেকে ফার্স্ট বেঞ্চে বসবেন। টিচার কাশি দিলেও সেটা ক্লাসনোটে তুলবেন। পুরা সেমিস্টার অমানুষের মত রাত-দিন পড়ালেখা করবেন। বস্তা ভরে নম্বর পাবেন। পাশ করলে দুই-একটা চাকরিও পেয়ে যাবেন। আর কিছু দিন পরে কঠিন কঠিন ইংরেজি শব্দ মুখস্থ করে, রেডিমেড গার্মেন্টস এর মত ইউরোপ-আম্রিকায় এক্সপোর্ট হয়ে যাবেন।
মনোযোগ না থাকা সমস্যা না। মনোযোগ নাই বলে- মোবাইল গুঁতাই গাঁতায় সারা দিন পার করে দেয়াটা সমস্যা। পড়া না বুঝা সমস্যা না। না বুঝা জিনিসটা অন্য কারো কাছে বুঝতে না চাওয়াটা সমস্যা। "আগে পারতাম- এখন আর পারিনা" বলার মানেই পরাজয়ের শর্ট সার্কিটে নিজেকে সমর্পণ করা।
"নাহ। এইবার থাক। এইবার প্রিপারেশন ভালো না। পরেরবার আগে থেকে শুরু করে, ফাটায়া ফেলমু"। হয়তো তোমার প্রিপারেশন সুবিধার না। লজিক্যালি চিন্তা করলে, তিন মাসে, কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আসবে না। তাই BCS, GRE, TOEFL, HSC এর মতো স্পেশাল পরীক্ষার দিন ঘনিয়ে আসলেই, পিছলায় যাওয়ার ইচ্ছা বাড়তে থাকে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়লেই যে সাংবাদিক হতে পারবে না, ভূগোল-ইতিহাসের ডিগ্রি থাকলেই যে মার্কেটিং এর জবে করতে পারবে না- তা কিন্তু না। বরং সাহিত্যে না পড়েও লেখক হয়। বিবিএ-এমবিএ ছাড়াও বিজনেস করে। সায়েন্সের সাবজেক্টে না পড়েও প্রোগ্রামার হয়। কারণ কারো সাবজেক্ট, ডিগ্রি, এমনকি তার ভার্সিটির নাম-দাম তার ক্যারিয়ারের প্রতিবন্ধক না।
কে কোন জব পাবে, কার কি ক্যারিয়ার হবে সেটা কিন্তু তার ইন্টারিভউ দিয়ে ডিসাইড হয় না। বরং এই জিনিসটা আগে থেকেই ডিসাইড হয়ে যায়। তুই চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবি তোর ক্লাসের কোন ছেলে বা কোন মেয়েটা বেশি একটিভ। এবং কার ভালো ক্যারিয়ার হবে। কে ভালো জায়গায় চাকরি পাবে সেটা আগে থেকেই বলে দেয়া যায়। তারমানে স্টুডেন্ট লাইফে কি কিভাবে সিস্টেম করে নিজেদের ডেভেলপ করে নেয় তার উপরেই তার ক্যারিয়ার ঠিক হয়।
বাঘ/ ভাল্লুক/ হরিণ শিকার করতে চাইলে, হাতে বন্দুক থাকলেই হবে না, সেটা চালাতেও জানতে হবে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে, সবাই সোনার হরিণ পেতে চাই। কিন্তু হরিণ ছানা কই থাকে, কেমনে থাকে, কোন সময়ে গেলে পাওয়া যাবে, তারজন্য পাঁচ মিনিট সময়ও ব্যয় করতে চাইনা। তাই শেষমেশ হরিণ বাদ দিয়ে টিকটিকির ছানা নিয়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করা লাগে।
কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিসিএস ক্যাডার না এনজিও অফিসার হবে, তা এইচএসসির রেজাল্ট বা ভর্তি পরীক্ষার উপরে কিছুটা নির্ভর করলেও, জীবনের সফলতা-ব্যর্থতার পাঁচ পার্সেন্টও এইচএসসির রেজাল্টের উপর নির্ভর করবে না। ধরেন, আপনি গোল্ডেন ৫ পেয়ে গেলেন। আপনার কি ভালো ভার্সিটিতে বা মেডিকেলে চান্স হয়ে গেলো? ভালো সাবজেক্ট কনফার্ম হয়ে গেলো? জীবনে সফল হয়ে গেলেন?
স্কুল কলেজে এমন একটা সাবজেক্ট সবসময়ই ছিলো যেটারে আপনি ভয় পাইতেন। ধরেন সেটা হচ্ছে কেমিস্ট্রি। কেমিস্ট্রি ভয় লাগে কারন লম্বা লম্বা রিঅ্যাকশনের আগা মাথা কিচ্ছু আপনার মাথায় ঢুকে না। তো, সেগুলা বুঝেন না দেইখ্যা কেমিস্ট্রি পড়া তো দুরে থাক বই খুলতেই ইচ্ছা করে না। কারণ আপনার মনে হয় এই সাবজেক্ট অনেক কঠিন। অন্য সব সাবজেক্ট পড়া হইলেও কেমিস্ট্রি পড়া হয় না। এখন ব্যাপারটা যদি উল্টা দিক থেকে সামারি আকারে দেখি তাইলে দাড়ায় "আপনি কেমিস্ট্রি পড়েন না, তাই পারেন না"
প্রেম রিলেটেড প্রশ্ন, হতাশা কিংবা কনফিউশন রিলেটেড প্রশ্নের উত্তর
শুধুমাত্র কম্পিউটার অন-অফ করতে পারেন এমন মানুষও ওয়েবসাইট বানাতে পারবে।
নাকানি চুবানি খাইতে খাইতেও মানুষ হইতে পারলাম না। ড্রিম জব ল্যান্ড করাতো দুরের কথা।
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]