নেক্সট স্টেপ নিয়ে ভাবো, দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছাবে

অযথা প্ল্যান, করে ফিউচার ম্লান

Plan related main page

ধরেন আপনাকে, মিরপুর দশ নম্বর গোলচক্কর থেকে শাহবাগে যেতে হবে কে ক্ষমতায় আছে আর কার ক্ষমতায় থাকা উচিত সেটা নিয়ে আপনার কোন চিন্তা বা অভিমত নাই। কারণ আপনার মাথায় একটাই চিন্তা শাহবাগের হাসপাতালে শুয়ে আছে অসুস্থ মা। হাসপাতালে গিয়ে ঔষধ কিনে দিতে হবে। তাই ঠিক সময়ে না গেলে, মা আরো অসুস্থ হয়ে যাবে। অনেকক্ষণ অপেক্ষার পর একটা বাস আসলো তখনি বুকের ভিতর মোচড় দিয়ে উঠলো, যদি পেট্রোল বোমা মারে ! আগুনে কয়লা হবার ভয়ে, রিক্সাওয়ালাকে জিগ্যেস করতেই। ভাড়া চাইলো ৪৫০ টাকা। এতটাকা ভাড়া দিলে, ঔষধ কিনার টাকা থাকবে না তাই, হাঁটা শুরু করে দিলেন, শাহবাগের মেডিকেলের দিকে

আপনি যখন হাটা শুরু করলেন, তখন আপনি যদি ভাবেন মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর থেকে শাহবাগ অনেক দূর? সারাদিন লাগবে, শেষ পর্যন্ত পৌঁছতে পারবো তো। পথে যদি গেঞ্জাম হয়! পা কি অনেক ব্যথা করবে, শেষমেষ যদি যাইতে না পারি। এত্ত এত্ত হিসেব, প্ল্যান আর ভয় পাইলে আপনি যাত্রা শুরুই করতে পারবেন না তাই আপনি চিন্তা করলেন, ১০ নম্বরের একটু পরেই তো কাজীপাড়া কাজীপাড়া পার হয়ে ভাববেন, আর পাচ মিনিট পরে শেওড়াপাড়া এইভাবে ছোট ছোট করে লক্ষ্য সেট করে সেটা অর্জন করতে থাকলেন। নিজের ভিতরেও একটু পুলকিত ফিলিংস -বাহ্ ভালোই তো আগাচ্ছি হালকা টায়ার্ড হয়ে গেলে, মাঝখানে পাচ মিনিট রেস্ট নিলেন এই শীতের মধ্যে হাটতে হাটতে, কপালের ঘাম, গাল দিয়ে বেয়ে বেয়ে পড়লো তারপরেও এক্সারসাইজ হচ্ছে বলে, নিজেকে এপ্রিসিয়েট করলেন।

একটু খেয়াল করলে, খুব সহজেই বের করতে পারবেন আমার আপনার সবার জীবনে, এমন একটা-দুইটা কাজ আছে যেটা কোনভাবেই শুরু করা হয় না জানি এইটা করা দরকার। জানি, এইটা করতে চাই। তারপরেও অন্য সবকিছু -খেলা দেখা, আড্ডা, ঘুরে বেড়ানো, ফেইসবুকিং হয় মাগার ওইটার চিন্তা মাথায় আসলে, কেনো জানি মনে টানে না। শুরু করবো করবো বলে আর শুরু করা হয় না।

আপনি শুরু করতে না পারার কারন হচ্ছে দুইটা - অনেক কঠিন, আর ফেইল করার ভয়টাও অনেক বেশি (যদি না পারি) ধরেন, কেমিস্ট্রি ভালো পারেন না। ভালো পারেন না, বলে পড়তে ভালো লাগে না জানেন কেমিস্ট্রি পড়া উচিত। তাও পড়া হয় না। ঠিক করেছিলেন, গত উইক এন্ডে শেষ করে ফেলবেন তাও, শুরু করতেই পারেন নাই। সো, আপনার উচিত পুরা কেমিস্ট্রিতে ভালো করার টার্গেট না করে টার্গেট করেন, আজকে শুধু জারণ-বিজারণটা শিখবেন এইটা হয়ে গেলে, আজকের মত কাজ শেষ পরেরদিন এইরকম ছোট আরেকটা অংশ ট্রাই করেন অনেকটা মিরপুর ১০ থেকে শাহবাগের দুরুত্ব না চিন্তা করে ছোট ছোট মিনি মিনি অংশ টার্গেট সেট করে এবং এচিভ করার মতো

আবার ইন্ধীরা রাডে এসে দেখলেন লোকজন ছুটতেছে, দৌড়ে পালাচ্ছে আপনি বুঝে গেছেন, ফার্মগেটে গেঞ্জাম হচ্ছে জান বাঁচানোর জন্য দিকবিদিক ছুটে রাস্তা চেইঞ্জ করে, পূর্ব রাজারবাজার দিয়ে না গিয়ে আড়ং-শুক্রাবাদ-সাইন্সল্যাব হয়ে যাবেন ঠিক করলেন আপনার লক্ষ্যের কাজটা করতে গেলেও ঝামেলায় পড়ে যাবেন দেখবেন বিক্রিয়ার সমীকরণ মিলাতে পারেন না লা শাতেলিয়ার নীতি বুঝতেছেন না তখন যেখানে আটকে গেছেন সেটা সাইডে রেখে অন্য কোন পছন্দের জিনিস বা সহজ জিনিস করতে গেলেন তারপর আবার পরে ফেরৎ আসলেন

আপনার কাজটাকে ছোট ছোট ভাগ করা এবং নিজেকে লাইনে রেখে বার বার ফিরে এসে ট্রাই করার কাজ কিন্তু অন্য কেউ বলে দিবে না ইনফ্যাক্ট অন্য কেউ বলে দিলেও লাভ হবে না। তারজন্য আপনার ভিতর থেকে ফিলিংস আসতে হবে কাজটার প্রয়োজনীয়তার ইমোশন নিজেকেই গ্রো করতে হবে যেমনটা করেছেন, ঠিক সময়ে হাসপাতালে পৌঁছানোর ইমোশন পেট্রোল বোমা, রাজনীতি-সরকার সবার চাইতে ইম্পর্টান্ট আপনার আম্মু । আপনার মা।

সঙ্গেই থাকুন::

হুট হাট করে মাঝে মধ্যে লেখা আসবে


FB post




Question or Feedback:

যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]