Dream is to achieve not to dream
উত্তর: অবশ্যই পারবে। এবং ওদের চাইতে বেশি পারবে। কারণ আগে শিখে আসা পোলাপান- "আমি পারি। আমি পণ্ডিত"। মনে করে। ঢিলামি করবে। আর তুমি পারো না, তুমি পিছিয়ে আছ মনে করে, ভয়ে ভয়ে পড়তে বসলে, একটু সিনসিয়ারলি ক্লাস আর এসাইনমেন্ট করলে। দুই-তিন সেমিস্টার পরে দেখবা বেশিরভাগ লাফাইন্না পোলাপানরে পিছনে ফেলায় দিছ। আসলে, আজকে কে কোন অবস্থানে আছে, সেটা ইম্পরট্যান্ট না। ইম্পরট্যান্ট হচ্ছে, কার চেষ্টার গতি কত বেশি। যার চেষ্টার গতি যত বেশি হবে, সে তত দ্রুত এগিয়ে যাবে। যেতে যেতে অনেককেই পিছনে ফেলে দিবে।
উত্তর: ধরলাম, তুমি HSC তে গোল্ডেন পাইছো। সেই ওভার কনফিডেন্সে ভার্সিটিতে এসে সারাদিন বন্ধুদের সাথে গুটি-বাজি করলে, তোমার HSC এর গোল্ডেন কি তোমাকে পাশ করাতে পারবে? না পারবে না। কারণ, HSC তে তুমি বাঘ-ভাল্লুক,ব্যাঙ-চামচিকা যাই থাকো না কোনো, ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে সেই বাঘ-ভাল্লুকের ভ্যালু শেষ। এখন ভার্সিটির আঙ্গিনায় নতুন সিস্টেমে নতুন খেলা হবে। এই খেলায় যে যত বেশি হার্ড ওয়ার্ক করবে, সে ততো ভালো করবে। সো, তুমি সিএসইতে পড়া চালায় নিতে পারবা কিনা, সেটা তোমার HSC এর রেজাল্টের উপর নির্ভর করবে না। নির্ভর করবে তোমার ভার্সিটি লাইফের চেষ্টা, সাধনা, লেগে থাকার উপর। এমন শত শত উদাহরণ আছে- যেখানে কলেজের ভালো স্টুডেন্ট ভার্সিটিতে এসে ডাব্বু মারে আর পিছিয়ে থাকা একজন রেগুলার ছক্কা হাঁকায়।
উত্তর: mathematics জানলে ভালো। প্রোগ্রামিং কনটেস্ট বা গুগল ফেইসবুকের মত বড় বড় কোম্পানিতে চাকরি বা রিসার্চ জব করতে সুবিধা হবে। তবে সাধারণ ওয়েবসাইট, সফটওয়্যার, মোবাইল এপ্লিকেশন বানানোর জন্য সাধারণ যোগ, বিয়োগ, গুন, ভাগের বেশি দরকার হয় না। বছরে দুই একবার দরকার হয়। তখন অন্যদের হেল্প নিয়ে কাজ চালিয়ে নেয়া যায়। জিনিসটা অনেকটা গাড়ির ড্রাইভার হওয়ার মতো। গাড়ি ড্রাইভ করার জন্য, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বা গাড়ির সব নাট বল্টু মুখস্থ করা জরুরি না। তবে খুঁটিনাটি জানলে ভালো। একইভাবে প্রোগ্রামার হওয়ার জন্য mathematics এর জাহাজ হওয়া লাগবে না। তবে হইলে ভালো।
উত্তর: তোমার ক্লাসে যেটা শিখায়, সেটাই ভালো করে শিখো। ক্লাসের পড়া বাসায় এসে নিজে নিজে প্রাকটিস করো। এসাইনমেন্টগুলো বুঝে বুঝে করার চেষ্টা করো। তাইলেই হবে। আর ক্লাসের পড়া ঠিক রেখে, নিজে নিজে প্রোগ্রামিং কনটেস্ট করতে চাইলে C শিখো। নিজে নিজে মোবাইল এপ্লিকেশন বানাইতে চাইলে জাভা শিখো। ওয়েবসাইট বানাতে চাইলে html, css দিয়ে শুরু করো। চাইলে পাইথনও শিখতে পারো। যেই প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়েই শুরু করো না কোনো, সেটার মধ্যে সারাজীবন পড়ে থাকতে হবে না। দরকার হলে, যেকোনো সময়, এক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ থেকে অন্য প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে সুইচ করতে পারবে।
উত্তর: প্রোগ্রামিং কনটেস্ট বা প্রবলেম সলভ করতে পারলে ভালো। প্রোগ্রামিং এর অনেক ভিতরে ঢুকতে পারবে। কঠিন কঠিন গাণিতিক সমস্যা সমাধান করতে পারবে। বড় বড় কোম্পানি যেমন গুগল, ফেইসবুক, মাইক্রোসফটে চাকরি পাওয়া সহজ হবে। তবে গুগল মাইক্রোসফটের মত বড় বড় শ’খানেক কোম্পানি বাদ দিলে দুনিয়ায় কোটি কোটি কোম্পানি আছে যারা প্রতিদিন কঠিন কঠিন গাণিতিক সমস্যা সমাধান করে না। এসব কোম্পানিতে চাকরি পাওয়ার জন্য কঠিন কঠিন প্রোগ্রামিং প্রবলেম সলভিং স্কিল লাগে না। প্রোগ্রামিং সম্পর্কে ধারণা এবং কাজ জানলেই হয়। তাই প্রোগ্রামিং কনটেস্ট করতে পারলে ভালো। তবে না করতে পারলে আফসোস করার কিছু নাই।
উত্তর: তুমি বিরিয়ানি চিনো? খিচুড়ি চিনো? ফ্রাইড রাইস চিনো? সাদা ভাত চিনো? এগুলা আলাদা আলাদা খাবার হইলেও কিন্তু সবগুলাতেই চাল লাগে, চাল সিদ্ধ করা লাগে। প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলাও অনেকটা একই রকম। উপরে আলাদা হইলেও ভিতরের কনসেপ্ট একই রকম। তাই যেটা ভালো লাগে, সেটা শিখো। সেটা দিয়ে কিছু একটা তৈরি করো। প্রাকটিস করো। একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ভালো করে জানলেই হবে। পরে দরকার হলে খুব সহজেই অন্য আরেকটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজে সুইচ করতে পারবে।
উত্তর: তোমারে কে বলছে যে রেজাল্ট ভালো হইলে স্কিল ভালো ডেভেলপ করা যায় না? তোমার আশেপাশেই, বা সিনিয়র দুই একজনকে খুঁজে পাওয়া যাবে যে, ক্লাসে ফার্স্ট হয় আবার সারাদিন ফুটবল খেলে বেড়ায় বা ACM কনটেস্টে পুরস্কার জিতে। তাছাড়া কেউ রেগুলার ক্লাস করলে, ক্লাসের এসাইনমেন্ট, প্রজেক্ট খেয়াল করে করলে, তার স্কিল এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে। আর সেমিস্টার ফাইনালের পরে, নতুন সেমিস্টার শুরু হওয়ার আগে, যে ২০দিন সময় পাওয়া যায়, স্কিল শক্তপোক্ত বানানোর জন্য নিজে নিজে প্রাকটিস করো। সেমিস্টার চলাকালীন সময়েও হাবিজাবি কাজে সময় নষ্ট না করে প্রোগ্রামিং করে স্কিল আসমানে তুলে ফেলা সম্ভব।
উত্তর: তুমি যে গান্ধি মার্কা ভার্সিটিতেই ভর্তি হও না কোনো, এমন চার-পাঁচজনকে দেখাতে পারবা যারা এক বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি খুঁজতে খুঁজতে হয়রান কিন্তু চাকরি পাচ্ছে না। না, দেখাতে পারবা না। কারণ হালকা কোয়ালিটি থাকলেও, একটা না একটা চাকরি পেয়েই যায়। সো, সবাই চাকরি পাবে। তবে দেখার বিষয় হচ্ছে, কে কত ভালো চাকরি পাইলো। তাই ভার্সিটি লাইফে যত বেশি চেষ্টার গুড় ঢালবে, যত ভালোভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে, তত দ্রুত তত ভালো চাকরি পাবে।
উত্তর: ল্যাংটা-কাল থেকে আজ পর্যন্ত যা যা খাইছ, সব যদি তোমার শরীরে লেগে থাকলে, তুমি এভারেস্টের সমান উঁচু হয়ে যাইতা। সো, সারা জীবন যা যা খাইছ সব যেমন তোমার শরীরে থাকবে না। একইভাবে, সারা জীবন যা যা শিখছ, সব কিন্তু মনে থাকবে না। তবে কোন একটা জিনিস প্রথমবার বুঝে বুঝে করতে যদি চার ঘন্টা লাগে। দুই মাস পরে ওই একই জিনিস বুঝে বুঝে করতে কিন্তু চারঘন্টা লাগবে না। বরং দেড়-দুই ঘন্টায় বুঝে ফেলবে। সেই একই জিনিস আরো দুই মাস পরে দেখতে গেলে আরো কম সময় লাগবে। তাই, ভুলে যাচ্ছি বলে মন খারাপ করে বসে বসে আরো সময় নষ্ট না করে, ঐ একই জিনিস প্রাকটিস করো। ঐ জিনিস দিয়ে কোন একটা এপ্লিকেশন বানাও। এইভাবে একই জিনিস বারবার প্রাকটিস করলে, প্রেমিকার নাম ভুলে যেতে পারো, মাগার প্রোগ্রামিং ভুলবা না।
উত্তর: ইন্টার্ন পাওয়ার জন্য প্রোগ্রামিংয়ের যেকোনো সাইডে ভালো জানতে হবে। ইউটিউবে ভিডিও বা অনলাইনে টিউটোরিয়াল দেখে, নিজে নিজে সফটওয়্যার, মোবাইল এপ্লিকেশন, ওয়েবসাইট বা গেমস বানায় ফেলতে হবে। যাতে কোম্পানির লোকেরা দেখে বুঝতে পারে, তুমি এখনো স্টুডেন্ট হইলেও ভিতরে জিনিস আছে। তারা তোমাকে পার্ট টাইম বা ইন্টার্ন হিসেবে নিলেও ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবে। আর ইন্টার্ন পাওয়ার জন্য ফ্যাকাল্টি, ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র ভাইয়া আপুদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। ভার্সিটির বাইরে বিভিন্ন সেমিনার বা ওয়ার্কশপ গিয়ে লোকজনের সাথে কথা বলে বলে নেটওয়ার্কিং করতে হবে। আর লেগে থাকতে পারলে, ফ্রিলাঞ্চিং বা মার্কেট-প্লেসেও কাজ করে উপার্জন করতে পারবে।
উত্তর: অন্য যেকোনো সাবজেক্টের চাইতে সিএসইতে স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ বেশি। তবে তুমি যখন বাইরের দেশের ভার্সিটিতে এপ্লাই করবা তখন কম্পিটিশন হবে দুনিয়ার সব দেশের ভালো ভালো স্টুডেন্টদের সাথে। আর তাদের সাথে টাক্কা দিতে চাইলে জিপিএ ভালো থাকতে হবে। ৩.৭০ বা ৩.৮০ বা ৩.৯০ বা তারও বেশি। জিপিএ ভালো থাকার পাশাপাশি, ভালো প্রজেক্ট বা প্রোগ্রামিং কনটেস্টে ভালো করতে পারলে স্কলারশিপ পাওয়া সহজ হয়ে যাবে। আর পাশ করার পর জিআরই এবং টোফেল নামে দুইটা পরীক্ষা দিয়ে স্কলারশিপের জন্য এপ্লাই করতে হবে। আপাতত জিআরই, টোফেল নিয়ে চিন্তা করার কিছু নাই। জিপিএ ভালো রাখো, সিনসিয়ারলি প্রজেক্ট করো, স্কিল ডেভেলপ করো। পরেরটা পরে দেখা যাবে।
উত্তর: নিজের ইথিকস আগে ডেভেলপ করা লাগবে।
হুট হাট করে মাঝে মধ্যে লেখা আসবে
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]