Study smart for excellent result.
পাঁচ মিনিটের জন্য চা খেতে গিয়ে এক ঘন্টা আড্ডা মারলে, বা দশ মিনিটের কথা চিন্তা করে ল্যাপটপে ঢুকে তিন ঘন্টা পার করে দিলে; কিংবা বন্ধুর সাথে এক ঘন্টা দেখা করতে গিয়ে সারাটা দিন ট-ই-ট-ই করে ঘুরে বেড়ালে, কেউ তোমাকে নিষেধ করবে না। পুরা সেমিস্টারে গ্রুপ প্রজেক্টের খোজ না রাখলে, এসাইনমেন্টগুলা হুবহু কপি-পেস্ট মারলে, কিংবা ক্লাস শুরুর পাঁচ মিনিট পরেই পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেলে; কেউ তোমাকে ধরে বেধে ক্লাসে ফেরত নিয়ে আসবে না। টিভি সিরিয়ালের একটা এপিসোড দেখতে বসে, একটানা ১৩টা এপিসোড গিলে গিলে হজম করে ভোর ৪টা বাজিয়ে দিলেও অন্য কেউ এসে তোমাকে ঘুমাতে যেতে বলবে না।
তুমি বড় হয়েছ, স্মার্ট হয়েছ, পাখনা গজিয়েছ। এই পাখনায় ভর দিয়ে, রঙিন চশমা ফাঁক দিয়ে, রং বেরংয়ের দুনিয়া দেখতেই পারো। তবে চান্দু, যতই স্মার্ট-গিরি ফুটাও না কোনো। যতই ক্লিকবাজিতে চ্যাম্পিয়ন হও না কোনো। ক্লাসের অন্য পোলাপানের আগে পাশ করে বের হয়ে যেতে পারবা না। বরং দুই-তিনটা সাবজেক্টে ক্রস খাইলেই; রঙিন দুনিয়া, আন্ধার হয়ে যাবে। আর আট-দশখান ক্রস খেয়ে ফেলতে পারলে, দুই-তিন সেমিস্টার বেশি সময় নিয়ে ধীরে সুস্থে পাশ করতে পারবে। তবে ভাগ্য ভালো হলে, তোমার ক্লাসমেটের আন্ডারেই ক্লাস করতে পারবে। তাছাড়া প্রতিদিন ফ্রি ফ্রি হতাশার বড়ি খেতে পারবে। বন্ধুদের পাশ করা, চাকরি, বিয়ে-হানিমুনের ছবি দেখে, লজ্জায় মুখ লুকাতে পারবে।
অথচ ওরা যত দিন ভার্সিটিতে ছিলো, তুমিও ততদিন ছিলা। ওরা যে যে কোর্স নিছিলো, তুমিও সেই সেই কোর্স নিছিলা। ওরা যেই ক্লাসরুমে যে টিচারের ক্লাস করতো, তুমিও একই ক্লাস করতা। আর ওরা যে ফাঁকিবাজি করে নাই। আড্ডা, খেলা দেখা, ঘুরতে যায় নাই। তা কিন্তু না। তারপরেও ওরা এগিয়ে গেছে আর তুমি গ্যাঁড়াকলে পড়ে গেছ। কেন?
কারণ তুমি পরীক্ষার আগের দিন রাতে পড়তে বসতা। আর ওরা পরীক্ষার তিন-চার দিন আগে পড়তে বসতো। তুমি ক্লাসের লাস্ট বেঞ্চে বসে, খোঁচাখুঁচি, মোবাইলে একটার পর একটা ম্যাসেজ দিতেই থাকতা। আর ওরা দুই-একটা ম্যাসেজ দিলেও, পাঁচ মিনিট পরে ক্লাসে আবার মনোযোগ দিতো। একটু আধটু ক্লাস-নোট তুলতো। আর তুমি খাতাই বের করতা না। ওরা সারা বছর আড্ডা দিলেও, পরীক্ষার এক দুই-সপ্তাহ আগে আড্ডা বন্ধ করে দিতো। চোখ বন্ধ করে এসাইনমেন্ট কপি-পেস্ট না করে, দুই-এক প্যারাগ্রাফ নিজে নিজে লেখার চেষ্টা করতো। কপি করা লাগলে বুঝে বুঝে কপি করতো।
ব্যস, এইটুকুই। এইটুকুই একজন ওকে টাইপ সফল আর ফেলটুস পোলাপানের মধ্যে ডিফারেন্স। ফেলটুস পোলাপান একটু বেশি মজা করে, একটু বেশি ফাঁকিবাজি করতে গিয়ে মাইনকা চিপায় পড়ে। আর মোটামুটি টাইপ সফল পোলাপান ফাঁকিবাজি করলেও, হালকা একটু সিনসিয়ার থাকে, হালকা একটু কেয়ারফুল থাকে।
এখন তুমি হালকা একটু বেশি মজা করবা, না হালকা একটু সিনসিয়ার থাকবা, সেই সিদ্ধান্তটা তোমার। কারণ লাইফটা তোমার। অন্য কারো না।
আর্ট অফ আতলামি- ৮