Enjoy Study to achieve life
বাঘ/ ভাল্লুক/ হরিণ শিকার করতে চাইলে, হাতে বন্দুক থাকলেই হবে না, সেটা চালাতেও জানতে হবে। আমাদের সমস্যা হচ্ছে, সবাই সোনার হরিণ পেতে চাই। কিন্তু হরিণ ছানা কই থাকে, কেমনে থাকে, কোন সময়ে গেলে পাওয়া যাবে, তারজন্য পাঁচ মিনিট সময়ও ব্যয় করতে চাইনা। তাই শেষমেশ হরিণ বাদ দিয়ে টিকটিকির ছানা নিয়ে ভ্যালেন্টাইন্স ডে পালন করা লাগে।
কাঁঠাল কিনতে গেলে আপনি যেমন, সবচেয়ে ভালো কাঁঠালটা কিনতে চান। তেমনি, কোন কোম্পানি হায়ার করার সময় সবচয়ে স্মার্ট কাঁঠালকেই হায়ার করবে। সেই স্মার্ট কাঁঠাল হইতে হইলে -
১. আপনাকে ক্লাসের অন্যতম স্মার্ট পারসন হতে হবে। স্মার্ট বলতে চাল্লু বা দুরুন্ধর না বরং ক্লাসের আনঅফিসিয়াল রিপ্রেজেন্টেটিভ হইতে হবে। ক্লাস নোট ফটুকপি করে আনলেন সবার জন্য। স্যার বলছে, ক্লাসরুমের প্রজেক্টর ঠিক করার কথা বলতে হবে, আপনি আগ বাড়িয়ে নিজে থেকে করে দিবেন বলছেন। এইরকম খুচরা খাচরা।
২. নিজের স্বার্থ সাইডে রেখে অন্যদের স্বার্থ হালকা একটু দেখলে, নিজের স্বার্থ সবচেয়ে বেশি উদ্ধার হয়। কারণ, আপনি যদি ক্লাসের পোলাপানরে একটু একটু হেল্প করেন। সেই হেল্পের বদৌলতে, আপনি সবার কাছ থেকে অল্প অল্প উপকার পাইলে, আপনার মোট উপকারের পরিমাণ অন্য সবার চাইতে সবচেয়ে বেশি হবে। ফাও হিসেবে, প্রজেক্টর নষ্ট হইলে কেমনে ঠিক করতে হয় সেটাও শিখে ফেল্লেন। এই রকম অনেক কিছু আপনাকে অনন্য করে তুলবে।
৩. পরীক্ষার সাজেশন, ক্লাস বাঙ্ক মারলে, ক্লাস সাসপেন্ড হইলে, ক্লাস টেস্ট পিছালে সবার আগে আপনি জানবেন। সেটা কিন্তু আপনি নিজ গরজে সবারে জানাই দিলেন। কোন ছ্যাঁচড়া এর কাছে বার বার ঘ্যানর ঘ্যানর করে পিকনিকের চাঁদা তুলে আনলেন। এতে সবার উপকার হইলেও আপনার অনেক পিপল হ্যান্ডেল করার স্কিল ডেভেলপ হয়ে যায়। ফাঁকতালে।
৪. কোন টিচারের কাছে, কোন টিউশনি আসলে, সবার আগে আপনি জানাবেন। স্যার আপনাকে বলবে, কাউকে জোগাড় করে দিতে হবে। তখন আপনার যদি টিউশনি লাগে। কেল্লা ফতে, প্রথম মাসের অর্ধেক ছাড়াই পেয়ে গেলেন। তার চাইতে বড় উপকার হয়,যখন, কোনো সিনিয়র বা টিচার চাকরি দেয়ার জন্য কাউকে খুঁজে, সেটার খবরও আপনি সবার আগে পাবেন। এখন ঝোপ বুঝে কোপ মেরে, একটু কম দিল দরিয়া হয়ে, নিজের স্বার্থটা সবার আগে হাসিল করতে পারলেন। নিজে খাওয়ার পর এক্সট্রা কিছু থাকলে ক্লাসমেটদের দিবেন।
হরিণ শিকারের টার্গেট সেট করতে হবে, স্টুডেন্ট লাইফ থেকে -
৫. ধরেন, আপনি ইউনিলিভারে জব করতে চান। তাইলে, ডিপার্টমেন্টে একটা ওয়ার্কশপ অর্গানাইজ করেন। ইউনিলিভারের লোকজনরে ইনভাইট করেন। আপনি যদি অর্গানাইজ করলেন। তাইলে আপনি কিন্তু ওদের সাথে একটা সম্পর্ক শুরু করলেন। তাদের ইনভাইট করতে গেলে। এইভাবে এক দুইবার ইন্টারেকশন হইলে, পরে যখন জব খুঁজা শুরু হবে, তখন তাদের কাছে টিপস চাইবেন। বুদ্ধি চাইবেন। সেটা কিন্তু যেই কেউ হুট করে চাইতে পারবে না। আর চাইলেও রেসপন্স করবে না।
৬. ডিপার্টমেন্টের সিনিয়রদের সাথে সবসময় খাতির রাখবেন। তাদের সাথে প্রোগ্রাম অর্গানাইজ করবেন। ভলান্টিয়ার কাজকর্মতে অংশগ্রহণ করবেন। এতে তাদের সাথে একটা সম্পর্ক তৈরি হবে। খালি ফিউচারে জব পাওয়ার হেল্প ছাড়াও, আরো অনেক স্কিল ডেভেলপ হবে। নিজের অজান্তেই। যেমন, পাবলিক হ্যান্ডেল, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, নিগোসিয়েশন, প্রফেশনাল নেটওয়ার্কিং, এমনকি গার্ল-ফ্রেন্ডও পেয়ে যেতে পারেন।
৭. টিম বা গ্রুপ একটিভিটি গুলো একটু সিরিয়াসলি করতে হবে। একটা সেমিস্টারে অন্তত একটা সাবজেক্ট ভালো করে বুঝতে হবে। বেশি করে পড়তে হবে, এমন কথা নাই। ভালো করে বুঝতে হবে। বা ক্লাস প্রজেক্ট এবং প্রেজেন্টেশনগুলো সিরিয়াসলি দিতে হবে। এতে কমুনিকেশন স্কিল বাড়বে।
৮. হিন্দি প্রেম-পিরিতির প্যাঁচাপ্যাচি। বা গরিবি মুভি (গরিবি অর্থে, গরিব অভিনেতা অভিনেত্রী যাদের জামা কাপড় কিনার সামর্থ্য নাই) তাদের মুভি না দেখে , কিছু স্লো ইংলিশ মুভি দেখেন। যাতে ইংরেজি একটু বুঝতে এবং শিখতে পারেন। ইংরেজি ভালো করে বুঝতে এবং কমুনিকেট করতে পারি না বলে, আজকে সন্ধ্যায়ও বসের কাছে ঝাড়ি খাইছি।
৯. আগের বছরের সিনিয়র ভাইয়া আপুরা যখন জব ইন্টারভিউ দিবে, তখন কি কি প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছে, সেগুলার কি কি উত্তর দিছে, ওগুলা জেনে, কোথাও লিখে রাখবেন। কারণ, পরের বছর আপনার যখন দরকার পড়বে তখন উনারা এইগুলা ভুলে যাবে এবং হেল্প করার জন্য তাদের টাইম থাকবে না।
১০. যে কোম্পানিতে যেতে চান, সেখানে একটা ট্যুর সেট করেন বা ইন্টার্নের ব্যবস্থা করেন। অনেক গঞ্জনা পোহাতে হইলেও, আসল টাইমে জব ইন্টারভিউ দিতে গেলে, অন্যদের চাইতে অনেক আগায় থাকবেন।
১১. যদি ইন্টারভিউ এর ডাক পেয়ে যান. তখন কোন একটা জিনিস সম্পর্কে আরো ডিটেল জানতে চাইলে, আপনি সেই লিঙ্ক ধরে ওই কোম্পানিতে ফোন দিতে পারেন। তখন জিগ্যেস করবেন, তখন দেখা যাবে, অনেক সময়, হায়ারিং ম্যানেজারের কাছে, কল ফরওয়ার্ড করে দিছে। আসল জবের প্রশ্ন সম্পর্কে আইডিয়া পাবেন।
১২. এইসব আতলামি এর মাঝে, বসন্ত দিনে একটু হলুদিয়া পাখি দেখতে বের হবেন। ফ্রেন্ডদের সাথে একটু আধটু আড্ডা না মারলে লাইফ ডোঙ্গা হয়ে যাবে।
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]