দুনিয়ার কেউ ই মোটিভেশন ধরে রাখতে পারে না। অল্প কিছুক্ষণ মোটিভেশন থাকার পরে আবার কমে যায়। আসলে, আমাদের মোটিভেশন কমে যায় না বরং এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ট্রান্সফার হয়। এই যেমন, টাইগারদের খেলা জমে গেলে, অফিসের কাজ করার মোটিভেশনের চাইতে, লাইভ স্ট্রীম দেখার মোটিভেশন বেড়ে যায়। দশ মিনিট পড়ালেখা করলে, পড়ালেখা আরো কন্টিনিউ করার মোটিভেশনের চাইতে, ফেইসবুকে কে কি স্ট্যাটাস দিছে, কার পিকচারে কয়টা লাইক পড়ছে, সেটা দেখার মোটিভেশন বেড়ে যায়। তবে মেইন প্রবলেম হচ্ছে, এক জায়গা থেকে মোটিভেশন অন্য জায়গায় ট্রান্সফার হওয়ার পরে আগের জায়গায় আর ফেরৎ আসে না। যেমন, ফেইসবুক থেকে মোটিভেশন পড়ালেখায় ফেরৎ না গিয়ে, অনলাইন পোর্টালের সুড়সুড়ি মার্কা নিউজের দিকে চলে যায়।
মোটিভেশন যেহেতু বেশির ভাগ সময় তলানিতে পড়ে থাকে, সেহেতু সফল ব্যক্তিরা, কাজ যত কঠিনই হোক না কোনো, তাকে খুবই ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ফেলে যাতে সেগুলা পাঁচ-দশ মিনিট বা এক-দুই ঘন্টায় করে ফেলতে পারে। তাইলে মোটিভেশন কম হইলেও লিস্টের দুই-তিনটা কাজ করা হয়ে যায়। কারণ পুরা কাজটা একসাথে করা কঠিন হইলেও, ছোট ছোট অংশগুলা করা তুলনামূলক-ভাবে সোজা। তারপর যে কাজগুলি বাকি রয়ে গেছে সেখান থেকে আবার ছোট ছোট দুই-তিনটা অংশ বের করে। দুই একদিন পরে, কোন কারণে মোটিভেট হয়ে গেলে, কাজের ভিতরের কঠিন অংশ টুকু করে ফেলে। কারণ, কঠিন কাজগুলা, যেগুলা কেউ করতে চায় না, সেগুলা করার জন্য মোটিভেশনের দরকার হয়। এইভাবে মোটিভেশনের উঠা-নামার ঢেউয়ের সাথে তাল মিলিয়ে লক্ষ্যের কাজ আগাইতে থাকলে কয়েকদিন পরে দেখা যায়, আমোদ ফুর্তিতে টাইম পাস করা পোলাপানের চাইতে অনেক দুর আগাইয়া গেছে।
আবার কেউ কেউ বলে, কিছুই করতে ইচ্ছে করে না, খালি ঢিলামি বা প্রোকাস্টিনেট করি। একটু ভালো করে খেয়াল করে দেখেন, আপনি কিন্তু সব কাজে ঢিলামি করেন না। ঠিক সময়েই খাওয়া দাওয়া করেন, বাথরুম সারেন। ফেইসবুকের নোটিফিকেশনও ঠিক সময়েই চেক করেন। তাইলে, আসল কথা হচ্ছে আপনি দুই একটা কাজে প্রোকাস্টিনেট করলেও, সবগুলাতে করেন না। এইটার তিনটা সল্যুশন আছে। এক, আসল কাজ বাদ দিয়ে যেসব কাজ করে সময় নষ্ট করেন সেগুলা বাদ দিতে হবে বা অনেক বেশি কমায় ফেলতে হবে। আট ঘন্টা বসে বসে পুরা খেলা না দেখে শুধু হাইলাইটস দেখেন। প্রতিদিন দুই তিনটা পত্রিকা অনলাইনে ভাজা ভাজা না করে, ফেইসবুকের টাইম লাইনে অন্যরা যেসব নিউজ শেয়ার করে সেখান থেকে দুই একটা দেখেন। যে ঘন ঘন সেলফি বা স্ট্যাটাস দেয় তাকে আনফলো করে ফেলেন। দুই, কোন ফ্রেন্ডের কাছে পাঁচ হাজার টাকা জমা রেখে বাজি লাগেন - ওমুক দিন অতটার মধ্যে এই কাজ শেষ করতে না পারলে, সেই টাকা তার হয়ে যাবে। দেখবেন নিজের টাকা ফেরৎ পাইতে, মোটিভেশনের বন্যা বয়ে গেছে। তিন, প্রথম দুইটায় কাজ না হইলে, সেই ফ্রেন্ডরে বলেন, কানপট্টির নীচে ঠাটায়া দশ-বারোটা দিতে, মোটিভেশন উপচে পড়বে। গ্যারান্টি।
হুট হাট করে মাঝে মধ্যে লেখা আসবে
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]