How you see a genius, is not the way a genius is made.
গুরু নাম্বার - ২
Danny MacAskill, একটা এক্সারসাইজ বলের একপাশে, সাইকেল সহ উল্টিয়ে পড়ে ডিগবাজি খেয়ে আবার অন্যপাশে না পড়েই, সাইকেল চালিয় যেতে পারতো। আবার তিনি যেকোনো উচু জায়গা থেকে রেললাইনের চিকন পাতের উপরে লাফিয়ে পড়ে, ইজিলি সাইকেল চালায় যেতে যেতে, রেললাইনের এক পাত থেকে অন্য পাতে, জাম্প দিতে পারতো। কোনো এক শুভ সকালে, ড্যানির মাথায় আসলো, দুইটা জিনিস একত্রে করলে কুল কিছু হতে পারে। যেই কথা সেই কাজ। এক বার দুইবার না। একশ, দেড়শ বার চেষ্টা করে কোনো সুরাহা করে উঠতে পারতেছিলো না। যে ব্যাটা ক্যামেরা নিয়ে দাড়িয়ে ছিলো তার হাতে ঝিম ধরে গেছিলো। কিন্তু ড্যানি ছেড়ে দেবার পাত্র না। শেষপর্যন্ত, তিনশর ও বেশিবার চেষ্টা করার পর, এই দুইটা কাজ, একসাথে করতে পেরেছিলো। আমার একটা ফাইভ ফিঙ্গার রুল ছিলো। আমি ভাবতাম, কোনো একটা কাজ, চারবার চেষ্টা করে যদি না পারি, তাইলে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে, কাজটা হাল্কায়ে মডিফাই করে বা একটু বিরতি নিয়ে আবার ফিরে আসতে হবে। কিন্তু Danny Macaskill কে জানার পর থেকে আমি বুঝলাম, আমার এই রুল, মস্ত বড় একটা ভুল। ড্যানির স্ট্রাটেজি হচ্ছে, "As long as you have some breathe left, you have to keep going untill you nailed it."
আপনি দেখবেন, অনেকেই আপনার চাইতে অনেক দূর আগায় গেছে। তাদের সাথে নিজেকে তুলনা করলে, আপনার চলবে না। অমুকে হাফ প্যান্ট পড়ছে দেখে, আপনাকেও হাফ প্যান্ট পড়তে হবে, তা কিন্তু না। কাউরে ব্লাইন্ডলি ফলো করলে, আপনি ওই হাফ প্যান্টও তো পাবেনই না বরং নিজের আন্ডারপ্যান্টও হারায় ফেলবেন। মেসি-নেইমারের কোন জায়গায় পিম্পল উঠছে তা নিয়ে গবেষণার শেষ নাই। নিজের পিম্পল কবে যে, ফোড়া হয়ে, ঘা ধরা শুরু হইছে, সেই দিকে খেয়াল নাই। নিজেকে জানার জন্য একটু সময় দেন। কম্পিটিশন করেন, নিজের সাথে। উমুকে ফাস্ট দুই সেমিস্টারে ভালো রেজাল্ট করছে, এখন আর আমার চান্স নাই বলে। হাত পা ঘুটিয়ে, রাতভর যদি দেখেন game of thrones, খাইতে গেলে পাবেন মুরগির bones, আর কপালে জুটবে stones. আপনার নিজের তুলনা, নিজের সাথে। চাইবেন শুধু নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে। যতবার ব্যর্থ হচ্ছেন, ততবারই ভাববেন আপনি সফলতার কাছে চলে আসতেছেন। কারণ, Number of failures is the only difference between you and a successful person.
এইসব করতে গিয়ে ড্যানির কত্তবার যে, লাল সুতা বের হয়ে গেছে তার ইয়ত্তা নাই। হাটুর খুলি সরে গেছে, কয়বার যে হাত পা ভাঙ্গছে তার ইয়ত্তা নাই। একবার এমনভাবে ইনজুর্ড হইছে যে দুই বছর সাইকেল চালাতে পারবে না এমন কন্ডিশন। তাতে কিন্তু ড্যানি ছেড়ে দেয় নাই, বরং ড্যানি বলেছে, "You just have to force yourself. Pressure yourself. Your body, your mind is telling you not to do it. But if you really want to do it, you can overpower that fear."
আপনার জীবনেও এমন অনেক সময় আসবে যখন, আপনি ভয়ে অগ্রসর হতে পারবেন না। আর সাইডে দিয়ে আসবে অসংখ্য ডিস্ট্রাকশন। আরামের হাতছানি। আমারদের ব্যর্থতার মূল কারণ হচ্ছে, কষ্ট করতে মানসিক সাহসের অভাব। কনসেনট্রেট করতে পারি না। লেগে থাকতে পারি না। আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপনি কি কমফোর্ট জোনে থাকবেন। কে কয়টা ডক্টর হু না গু এর এপিসোড দেখছে, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার কার পাতলা পায়খানা হইসে, প্রিমিয়ার লীগে কে পাদ মারছে, হিন্দি সিনেমায় কে পশ্চাদদেশ চূলকায়ছে, সেই গ্বল্প করবেন? নাকি নিজের কমফোর্ট জোনের দেয়াল ভেঙ্গে নিজেরে ইনসেইনলি হার্ড ওয়ার্কিং জোনে নিয়ে যাবেন। কারণ, If you want to be insanely successful, you have to trash your comfort.
ড্যানির আশেপাশের অনেকেই হাড্ডিগুড্ডি ভেঙ্গে ফেলছে। যেমন, Michael Bonney নামে, নামকরা একজন সাইকেল চালাতে গিয়ে, পড়ে গিয়ে ঘাড় ভেঙ্গে এখন তার বাঁচা-মরা নিয়ে টানাটানি। টমি নামে আরেকজন মাউন্টেন বাইক নিয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে, হাত পা ভেঙ্গে এখন হুইল চেয়ারে। কিন্তু এই জিনিসগুলা মোটেও ড্যানির মাথায় আসে না। আপনার মাথায়ও আনা যাবে না। যেমন, আপনার ভার্সিটির আগের ব্যাচের ফাস্ট বয় বিসিএস পরীক্ষায় চান্স পায় নাই বলে যে, এই ব্যাচের লাস্ট বয় চান্স পাবে না, তা কিন্তু না। ড্যানির মতো, “Block your fear. Believe in yourself. And the more I achieve, the more I push myself to achieve.”
ড্যানি যাদের দেখে ইন্সপায়ার্ড হয় তাদের মধ্যে Martyn Ashton হচ্ছেন আরেকখান মাস্টার পিছ। ওয়ার্ল্ড মাউন্টেন বাইক চ্যাম্পিয়ন। সে একটা ভিডিও বানাচ্ছিলো ড্যানির মতো, কিন্তু ভিডিওর অর্ধেক বাননোর পথেই ইনজুরর্ড হয়ে কোমড়ের নিচের অংশ প্যারালাইজড হয়ে যায়। হাসপাতালের বেডে শুয়েই আরেক বন্ধুকে দিয়ে ভিডিও এর বাকি অংশ শেষ করান। কিন্তু ছেড়ে দেয়ার পাব্লিক এরা না। মার্টিন এখন প্যারা-অলিম্পিকের জন্য প্রিপারেশন নিতেছে। পা কাজ করেনাতো কি হইছে। হাত তো আছে। তাই হাত দিয়ে - হ্যান্ড বাইক চালিয়েই প্রতিযোগিতা করবেন।
আমরা শুধু ফিনিশিড মুভি দেখে মজা লই। বিহাইন্ড দ্যা সিন দেখি না। ৫ মিনিটের একটা ভিডিও বানানোর জন্য নিজেকে তৈরী করতে ড্যানির ১২ বছর সাধনা করা লাগছিলো। সাইকেলের দোকানে মেকানিক হিসেবে চাকরি করছিলো। সেই ভিডিও বানাইতে গিয়ে শখের চাকরিখানও ছাড়া লাগছিলো। ২০ দিন রাস্তায় ঘুরে ঘুরে ভিডিও রেকর্ড করতে গিয়ে দেখে ক্যামেরা ধরার কেউ নাই। অনেক কষ্টে, নিজের রুমমেটরে রাজি করাইছিলো। আর আপনি ৫ মিনিট না, আধা মিনিট খরচ না করেই ড্যানি হইতে চাইলে, আপনার চাওয়াটা বড্ড বে-ইনসাফের। ড্যানি বলেন “I pinch myself on almost a daily basis and that this is my job.”