সুখী হওয়ার চেষ্টাই সংগ্রাম
বিয়ের আধুনিক নাম- 'শো অফ'। এই শো-অফ একদিন করলে হবে না। ছেলের হলুদ, মেয়ের হলুদ, আকখ্ত, বিয়ে, বৌভাত, হাবিজাবি করতে করতে একই কাপলের চার পাঁচবার বিয়ে দিয়ে ফেললেও শো-অফ শেষ করা যাবে না। সবগুলা প্রোগ্রামে আলাদা ড্রেস, গোল্ডের অর্নামেন্টসের প্রদর্শনী করা লাগবে। হলুদে স্পেশাল ডান্স পার্টি করে ফেইসবুকে ভিডিও আপলোড করা লাগবে। সব প্রোগ্রামে ভিন্ন ভিন্ন পার্লারের প্যাকেজ, স্টেজের থিম, খাবারের মেনু, লাইটিং ওয়ালা ভেনু, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট হায়ার করা লাগবে।
বিয়েটা রোমান্টিক করতে, হোটেলের বাসর প্যাকেজ কিনতে হবে। প্লেনে করে হানিমুনে কক্সবাজার যেতে হবে। মিনিমাম দশটা ফটোগ্রাফি প্যাকেজ নেয়া লাগবে। প্রি ওয়েডিং, পোস্ট ওয়েডিং, ব্রাইডাল স্পেশাল, মিনি ভিডিও, এক্সক্লুসিভ বাসর শুট করার পরেও ডিফারেন্ট স্টাইলে ছবি তুলতে হবে। তবে আজকাল বিয়েতে ফটোগ্রাফি হয় না। বরং ফটোগ্রাফির মাঝে একটু আধটু সময় পাইলে বিয়ে হয়। এছাড়া ফটোগ্রাফির অনেক উপকারিতা আছে। এরা আমাদেরকে ডিসিপ্লিন শিখায়। লাইন ধরে একজনের পরে একজন আসার প্রাকটিক্যাল ক্লাস করায়। এখন ছেলের মামাতো ভাইয়ের খালাতো শালীর ছোট মেয়ে স্টেজে উঠবে। ক্লিক, ওকে ডান। নেক্সট। এরপর ছেলের জুতা চুরির ভিডিও শুট করা হবে। ছেলে রেডি, জুতা রেডি- লাইট, ক্যামেরা একশন।
তিন বছর চাকরি করেও, একটা বিশেষ দিনের কিছু বিশেষ মুহূর্ত ধরে রাখার খরচ যোগার করতে না পারলে, খরচ মিটানোর অন্য উপায় না খুঁজে, খরচ কমানোর উপায় খোঁজা উচিত। অথচ আমরা খরচ মিটানোর জন্য বাধ্য হয় লোণ নেই। সেজন্য, নতুন সংসারে আমাদের পদচারণ শুরু হয়ে ঋণের বোঝা নিয়ে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, খরচ করার এক হাজার একটা প্যাকেজ পাওয়া গেলেও, বিয়ের পরে নির্ভাবনায় সুখে শান্তিতে থাকার একটা প্যাকেজও পাওয়া যায় না। বিয়ের পরে শো-অফ করার কিচ্ছু বাকী থাকে না। তাই ঋণের চাপে জর্জরিত হয়ে মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজে পায় না অনেকেই।
হুট হাট করে মাঝে মধ্যে লেখা আসবে
যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]