ট্রুথ এন্ড টিপস এবাউট আম্রিকা -৪

সব ট্রুথ এন্ড টিপস

প্রেম প্রিরিতি ::

১. বাংলাদেশে প্রেমিকা থাকলেও প্রেমের পরিবেশ পাবেন না। আর আম্রিকায়, প্রেমের পরিবেশ পাইলেও প্রেমিকা পাবেন না।

২. কোনো কাস্টমার সার্ভিসে ফোন দিলে, please listen carefully, we have recently changed our menu, হুদাই অনেকক্ষণ হাবিজাবি শুনতে হবে। এমনকি এক মিনিট পরে ফোন দিলেও বলবে we have recently changed our menu । খালি খালি ফাইজলামি। তাই আমি কিছু শুনার আগেই, শুন্য প্রেস করে দেই। মাক্সিমাম সময়ে কাস্টমার রিপ্রেজেন্টেটিভের কাছে সরাসরি কল চলে যায়। ব্যস অনেকক্ষণ বকর বকর শুনা লাগে না। কাস্টমার সার্ভিসে কল দেয়ার ভালো সময় সকাল বেলা। দ্রুত পাওয়া যায়।

খাবার দাবার ::

৩. ভুলেও ওদের বলবেন না গ্লাসে কোক ভরে দিতে, পুরা গ্লাস বরফের মধ্যে এক চা চামচ কোক দিবে। তাই দেশী পোলাপান, কোক বা পানি উইথ নো আইস চায়। আর আম্রিকান পোলাপান পারলে বরফ চাবায় চাবায় খায়।

৪. কেউ আপনারে কোন রেস্টুরেন্ট এ খাইতে যাইতে বল্লে, ভুলেও ভাইবেন না যে সে খাওয়াবে। হামেশাই, হিজ হিজ হুজ হুজ। যার যার খাবারের বিল সে সে দিবে। এমন কি, প্রেমিক প্রেমিকারা নিজেদের বিল আলাদা আলাদা দেয়। বাসায় দাওয়াত দিলে সঙ্গে কিছু নিয়ে আসতে বলবে বা টাকা চাহিয়া বসলে, অবাক হবেন না।

৫. একই মানুষ দেখলাম, আম্রিকাতে হোটেলের বেয়ারা এক গ্লাস পানি এনে দিলে, থাঙ্কু থাঙ্কু বলে গলা ফাটায় ফেলে, অথচ দেশে কোনো রিক্সাওয়ালা বা চা ওয়ালারে ভুলেও থাঙ্কু বলে না।

৬. এইখানের মানুষগুলা দুধ সবসময় ঠান্ডা খায়। জাস্ট ফ্রিজ থেকে বের করে খেয়ে ফেলে। অন্যদিকে বাঙ্গালীরা গরম করে খায়। এইদেশের মানুষ বুঝে না আমরা কোনো গরম করে খাই। এই দেশেও টেটনা পোলাপান আছে। একদিন সকালে, আমার এক কলিগ বল্লো, "মানুষ ই একমাত্র প্রাণী যারা অন্য প্রাণীর (গরুর, ছাগল বা মহিষের) দুধ খায়" তারপর জিগ্যেস করলো, The guy who discovered milk….What was he doing with that cow?

জিম হেফাজত ::

৭. জিম বা সুইমিং পুলের লকার বা শাওয়ার রুমে, দৃষ্টির হেফাজত করুন। উড়নচন্ডি হয়ে,লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে কেউ কেউ ঘুরে বেড়ায়।

৮. শাওয়ারের গরম পানি আর ঠান্ডা পানির knob বা পানি ছাড়ার টেপ যে কত হাজার রকমের আছে। আল্লাহ মালুম। কোনটা যে কোন দিকে ঘুরাইলে কখন গরম পানি আর কখন ঠান্ডা পানি বের হবে সেটা বের করতে খবর হয়ে যায়। তাই বাথটাবের বাইরে দাড়াইয়া, এক মিনিট অপেক্ষা কইরা নিশ্চিত হয়ে নিবেন যে, এই পানির তাপমাত্রা ঠিক আছে। নচেৎ শাওয়ারের মধ্যে দাড়াইয়া knob ঘুরাইতে থাকলে, বরফের মত ঠান্ডা পানি বা গরম সিদ্ধ পানিতে দিয়ে আপনার বারোটা বেজে যাবে।

কেনাকাটা ::

৯. আমাদের আরেক সমস্যা হলো, অনলাইনে বিমানের টিকেট বা দামী কিছু কিনলে বিশ্বাস হয় না। আবার ফোন করে ভ্যারিফাই করি, সত্যি সত্যি টিকেট কনফার্ম তো !!!

১০. ওয়ালমার্টে গেলে, enter আর exit এর জন্য আলাদা আলাদা দরজা। তাও বাঙালি exit এর দরজা দিয়েই ঢুকবে। আর ওয়ালমার্টে তিনমাসের মধ্যে যে কোনো কিছু রিটার্ন দেয়া যায়। মোটামুটি সব স্টোরেই রিটার্ন পলিসি তিন মাসের মত। তাই অনেক বাঙালি আর ভারতীয় ওভেন, টিভি এমনকি ম্যাট্রেস কিনে আড়াই মাস ব্যবহার করে ফেরৎ দেয়। খুবই খারাপ ব্যাপার স্যাপার। ইচ্ছে করে ব্যবহার করে, রিটার্ন দিয়ে ফুল টাকা ফেরৎ নিয়ে আসে। একবার নাকি এক ভারতীয় ম্যানেজার, একজনকে কফি মেকার কিনার সময় বলে দিছে, তিন মাস পর ফেরৎ দিতে আসলে, ধুয়ে আইনেন, প্লিজ।

১১. কমলা একটা বিরক্তিকর ফল। খোসা সরানোর পরও সাদা সাদা আশ সরাতে হয়। ভিতরের বিচি এর দিকে খেয়াল রাখতে হয়। প্রথম প্রথম আসার পর একদিন ভাবলাম কমলা কিনি। দোকানে দেখলাম ডজন খানেক ছোট ছোট কমলার দাম ৬ ডলারের মত। পাশে দেখি বড় বড় সাইজের কমলা কিন্তু দাম ৪ ডলারের মত। আমি ভাবলাম কম দামে যদি বড় জিনিস পাওয়া যায়, তাইলে ছোট গুলা কিনমু কেন। ফিলিং লাইক এ বস। খুশি খুশি বাসায় এসে আয়েশ করে কমলা খেতে গিয়ে দেখি তিতা তো তিতা, মেগা লেভেলের তিতা। এই তিতা কমলা আরেকজনরে দেখাতেই সে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি টাইপ অবস্থা। সে বলে, মিঞা লেভেল পইড়া কিনবা না। লেভেলে দেখি লেখা আছে, গ্রেপ ফ্রুট। দেখতে অলমোস্ট কমলার রং এবং হালকা বড় সাইজ। তারপর আর কোন দিন কমলা কিনছি কিনা মনে নাই।

গ্রিন আপেলের ক্ষেত্রেও মোটামুটি একই কাহিনী। আপনি খাইতে পারবেন না। চরম টক। যদিও আম্রিকানরা দেদারসে খাইয়া ফেলবে, আরামসে।

১২. অনেক সময় রেস্টুরেন্ট এর সামনে লেখা থাকে, no public toilet আর বাথরুম বেশি চেপে গেলে হন্যে হয়ে, কোনো শপিং মলে গিয়া বাথরুম খুঁজে না পাইলে, কাউরে জিগ্যেস করেন। ভুলেও ফিটিং রুমে গিয়ে অনেকক্ষণ পর চিল্লায় উঠবেন না, "Hey, there is no toilet paper here"

FB post




Question or Feedback:

যদি লোকসম্মুখে প্রশ্ন জিগ্গেস করতে বা উপদেশ, বকাঝকা, গালাগালি, হুমকি দিতে সংকোচ লাগে তাইলে ইমেইল করে দেন [email protected]